
১৭ বছর বয়সে লেখাপড়া দুরন্তপনা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় ব্যস্ত সময় কাটায় কিশোরেরা।
এসব সুখ-আনন্দ ত্যাগ করে আর্থিক দুর্দশায় নিমজ্জিত পরিবারের হাল ধরেছেন কিশোর রাশেদ।
নিজের সুখ ত্যাগ করে পাড়ি জমিয়েছেন সৌদি আরবে। সেখানে আয়ের পাশাপাশি আলুর ভর্তা আর ডাল খেয়ে জমানো টাকাও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন এই কিশোর।
এরইমধ্যে রাশেদের ত্যাগের খবরের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর রাশেদের ত্যাগের প্রশংসা করছেন অনলাইন থেকে অফলাইনে থাকা ব্যবহারকারীরা।
গত ২৬ আগস্টে ‘প্রবাসী বাংলাদেশি’ নামক ফেসবুক পেজে রাশেদের সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি প্রকাশ হয়।
ভাইরাল ভিডিও-তে রাশেদ জানান, প্রতি মাসে এক হাজার ৫০০ থেকে ৬০০ রিয়াল আয় করেন রাশেদ। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় হয় ৩৬ হাজারের অধিক।
আয়ের সিংহভাগ টাকা দেশে পাঠান তিনি। প্রতিমাসে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩০ হাজার বা ২৮ হাজার পরিবারের কাছে পাঠান রাশেদ।
সদা হাস্যেজ্জ্বল এ ছেলে কখনই দেশে ২৪ হাজার টাকা নিচে পাঠান না।
সাক্ষাৎগ্রহণকারী প্রথম প্রশ্নেই ধাক্কা খান নেটিজেনরা। রাশেদের হাত খরচের কথা জিজ্ঞেস করলেই ১৭ বছরের কিশোর রাশেদ বলেন, প্রতি মাসে তার হাত খরচ ২০ থেকে ৩০ রিয়াল।
এ টাকা মোবাইলের কার্ড কিনতেই চলে যায়? এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদ বলেন, আমি মোবাইল কার্ড ব্যবহার করি না। ওয়াফাই দিয়ে আমা’র চলে।
পরের প্রশ্ন শুনে হতবাক নেটিজেনরা। খাবারের কথা জিজ্ঞেস করতেই রাশেদ যে উত্তর দেন তা হাজারো নেটিজেনদের আপ্লুত করেছে।
রাশেদ জানান, সৌদি আরবে কাজে আসার এক মাস চার দিন হয়েছে তার। ডাল আর আলু ভাজি ও ভর্তা খেয়ে দিন পার করেন তিনি। টাকা বেশি খরচ হবে বলে মাছ-মাংস খান না।
সৌদিতে আসার প্রথম দিকে মাছ-মাংস খেতেন। কিন্তু পরিবারের আর্থিক সংকটের কথা বিবেচনা করে মাছ-মাংস খাওয়া ছেড়ে দেন রাশেদ।
ভিডিও গ্রহণের দিন রাশেদ বেগুন ও আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়েছেন বলেও জানান।
দেশে সবচেয়ে বেশি কাকে মিস করেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে সবার মনে নাড়া দেয়। প্রতিত্তোরে রাশেদ বলেন, মাকে সবচেয়ে মিস করি।
টাকা দেয়ার ব্যাপারে ভিডিও-তে হাসিমুখে রাশেদ বলেন, ভাই ছোট, লেখাপড়া করে। বোনকে বিয়ে দিতে হবে। এই মাসে বাড়তি টাকা পাঠাতে হবে। আর টাকা মায়ের কাছে পাঠাই।
পরিবারসহ মায়ের জন্য কষ্ট করছি। মা হাশরে কষ্টের কথা বলবে। মা আমাকে ১০ মাস ১০ দিন ক’ষ্ট করে জন্ম দিয়েছে। আমি মায়ের ক’ষ্ট না বুঝলে কে বুঝবে?