
কুমিল্লা শহরে এক ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। তার নাম হলো জান্নাতুল হাসিন বয়স (২৩)বছর। নগরীর ধর্মসাগর পশ্চিম পাড়ের বাসিন্দা ইদ্রিস মেহেদীর মেয়ে।
বর্তমানে মানুষের মধ্যে আত্মহত্যা ক্রমশ বর্ধমান। তুচ্ছ ব্যাপার থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত নানা হতাশা থেকে অনেকেই আত্মহত্যার পথকে বেছে নিচ্ছে। আত্মহত্যার আগে তারা মনে করে, আত্মহত্যা করাই বুঝি মুক্তির শ্রেষ্ঠ পথ! তাই নিজের মনের সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিয়ে একটি মারাত্মক ভুল করে বসে আত্মহত্যাকারীরা। পৃথিবীতে বেঁচে থাকার ইচ্ছা ও আকুলতা মানুষের চিরন্তন সহজাত প্রবণতা। পৃথিবীতে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার উদগ্র বাসনায় মানুষ কত কিছুই না করছে! অথচ যারা আত্মহত্যার মতো জঘন্য পথকে বেছে নেয়, তারা যে কতটা বোকার স্বর্গে বাস করেছে তা অনুমান করা দুঃসাধ্য! হয়তো আত্মহত্যাকারীর দুঃখ-বেদনা, হতাশা সমাজ-রাষ্ট্র-পরিবার তাৎক্ষণিকভাবে বুঝে উঠতে পারেনি, তাই বলে কি নিজেকে বিসর্জন দেওয়া? এর থেকে দুঃখজনক কি-বা হতে পারে! সমাজের মানুষের স্নেহ-ভালোবাসার বন্ধন, সুন্দর পৃথিবীর মায়া-মমতা ও সুখী-সমৃদ্ধ জীবনের স্বপ্ন ত্যাগ করে এক শ্রেণির মানুষ ক্রমবর্ধমান হারে আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠেছে।
সোমবার ঢাকা থেকে কুমিল্লার বাসায় বেড়াতে আসে জান্নাতুল হাসিন। সারারাত মন খারাপ ছিল । বেলা দুইটার দিকে শ্যাম্পু আনার কথা বলে বের হয়। পরে পাশের গোল্ড সিলভার হোমসের একটি ৯তলা আবাসিক ভবন থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে। স্থানীয় ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মঞ্জুর কাদের আলমগির মনি বলেন যে , আমি আমার অফিসে বসে ছিলাম। হঠাৎ একটি আওয়াজ শুনতে পায় আমি । বেরিয়ে দেখি একটি মেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে মাঠিতে।
প্রত্যক্ষদর্শী সাইফুল হাসান শিমুল বলেন, আমি ঘটনাস্থলের পাশেই ছিলাম।কিন্তু হঠাৎ বিকট আওয়াজ হয়, পরে চেয়ে দেখি একটি মেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। কী কারণে সেই আত্মহত্যা করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে বাবা ইদ্রিস মেহেদী জানান, এখনও বুঝতে পারছি না, কেন আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমার তিন মেয়ে এক ছেলের মধ্যে জান্নাতুল হাসিন মেজ ছিল। সে বিবিএ শেষ করে এমবিএ পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়তে।
খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক আবদুর রহিম সুরতহাল প্রতিবেদন করেন একটা। পরে ঘটনাস্থলে আসেন কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক। পরিসংখ্যায তিনি জানান যে, অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি আত্মহত্যা করেছে। তবে এ ঘটনার পেছনে অন্য কোনো ঘটনা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।