
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারি তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্নীতি ও অসদাচারণের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত একই অফিসে কর্মরত থাকার সুযোগে বিভিন্ন ভাবে এ সকল অনিয়ম, দূর্নীতি করে আসছেন তিনি। তার কাছে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষকগণ জিম্মি হয়ে আছে।
অভিযুক্ত অফিস সহকারির বিরুদ্ধে উপবৃত্তির ফাইল সংক্রান্ত কাজে অর্থ গ্রহন, সরকারি বিনা মূল্যের বই বিতরণে স্কুল প্রতি ৩হাজার টাকা করে আদায় করা,শিক্ষক-কর্মচারীদের উচ্চতর স্কেল, বিএড স্কেল, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, সহ-প্রধান শিক্ষক, লাইব্রেরিয়ান ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের এমপিও সংক্রান্ত অনলাইন আবেদনে মোটা অংকের অর্থ দাবি করেন। তার চাহিদা মত টাকা না দিলে শুরু হয় নানা রকম হয়রানি ও অসৌজন্য মূলক আচরণ। অনেকটা বাধ্য হয়ে শিক্ষকগন তার মাধ্যমে অনলাইন আবেদন করেন।
আবেদন প্রতি অনলাইন ও অফিস খরচ বাবদ ৫-৮ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন তিনি। এছাড়াও গত ২২/১২/২০২০খ্রিঃ স্মারক নং ডিডি/কুঅ/বেবিত/২০২০/২৭৭৯ চিঠির আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অফিস কুমিল্লা অঞ্চল কর্তৃক বেসরকারি বিদ্যালয় সমুহের তথ্য সংরক্ষণের জন্য একটি অফিস আদেশ জারি করেন। উক্ত চিঠির আলোকে রায়পুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ডিডি অফিস চাহিত ফাইলগুলো মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহকে ২০/০১/২০২১ খ্রিঃ তারিখের মধ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়ার জন্য অবহিত করেন। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিনিধিগণ উপজেলা মাধ্যমিক অফিসে ফাইলগুলো জমা দিতে গেলে তাজুল ইসলাম প্রত্যোক শিক্ষক- কর্মচারির ফাইল প্রতি ৫০০ টাকা করে দাবি করেন। এতে শিক্ষকগণ অপারগতা প্রকাশ করলে জনপ্রতি ২০০টাকা করে দেওয়ার জন্য বলে। না হয় ফাইল জমা নেওয়া হবে না। তার এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই শিক্ষকদের নাজেহালের স্বীকার হতে হয়। এবিষয়ে শিক্ষকগন শিক্ষা অফিসারের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক বিভিন্ন মাধ্যমিক স্কুল ও দাখিল মাদ্রাসার ভোক্তভোগী একাধিক শিক্ষকগণ বলেন, রায়পুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে অফিস সহকারি তাজুল ইসলাম পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে এই অফিসে চাকরি করছেন। তার কাছে অফিসের যে কোন কাজের জন্য গেলে তিনি টাকা ছাড়া কোন কাজ করেন না। সরকারি বিনা মূল্যর বই আনতে তাকে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে দিতে হয়। শিক্ষক,কর্মচারীদেও নতুন নিয়োগের পর এমপিও’র জন্য অনলাইন আবেদন তার কাছে করার জন্য শিক্ষকদের তিনি বাধ্য করেন। আবেদন ও অফিস খরচের কথা বলে আমাদেও কাছ থেকে পাঁচ হাজার থেকে আট হাজার টাকা নেন তিনি। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের চাহিত তথ্য’র ফাইল জমা দিতে গেলে তিনি আমাদের কাছে ৫’শ টাকা করে দাবি করেন। আমরা প্রতিবাদ করলে তিনি ২শ টাকা করে দিতে বলেন। তার এসব অনিয়ম দূর্নীতি নিয়ে প্রতিবাদ করলে তিনি আমাদের সাথে অশালীন আচরণ করে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত রায়পুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারি তাজুল ইসলাম অভিযোগের আংশিক স্বীকার করে বলেন, অনলাইন আবেদনের কাজে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা নেয় সত্য। তবে কাউকে আমার মাধ্যমে আবেদন করতে বাধ্য করি না। এছাড়া আমি অন্য কোন টাকা নেয় না। আমি একটু জোরে কথা বলি এতে যদি শিক্ষকরা খারাপ আচরণ করি বলে তাহলে কছিু করার নাই।আমার কি হবে ? বদলি করবে করুক। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, অফিস সহকারি তাজুল ইসলাম শিক্ষকদের সাথে অশালীন আচরণের অভিযোগ পেয়ে তাকে সর্তক করে দিয়েছি। তবে অর্থ গ্রহনের কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।