
মাথার কোঁকড়া চুল এবং মুখের লাল ব্রণের দাগ। তবুও সে জনপ্রিয় দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রী সাই পল্লবী। দুই কোটি রুপির বিনিময়ে গায়ের রঙ ফর্সাকারী একটি ক্রিমের বিজ্ঞাপনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে উঠে এসেছিলেন দেশ-বিদেশের গনমাধ্যমের শিরোনামে। তবে কেন তিনি সে বিজ্ঞাপনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তাই এখন প্রায় সবারই জানা। নিজের চেহারা আর উচ্চতা নিয়ে একসময় এই অভিনেত্রী বেশ হীনমন্যতায় ভুগতেন। যোগ্যতা থাকার পরেও পেতেন না অভিনয়ের সুযোগ। তবে তার প্রেমাম ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর তার এই ধারণা ভেঙে যায়। তার স্বাভাবিক আচরণ ও চেহারা মেনে নেয় দর্শক। তারপর থেকে সাই পল্লবী দর্শকদের কাছে যেন একরাশ শুভ্রতার নাম। যে শুভ্রতা সাধারণ এবং সুন্দরের প্রতীক।

সাই পল্লবীর এই গ্রহণযোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তার কারণ খুঁজতে গিয়ে চলেছে রীতিমতো গবেষণা। ভারতের চলচ্চিত্র সমালোচকেরা একমত হয়ে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, প্রেমাম সিনেমার মালার, কালীর অঞ্জলি বা ফিদার ভানুমতিরা কেবল বড় পর্দার চরিত্র নয়। বরং তারা একেকজন একেবারে আটপৌরে ভারতীয় নারী। তীর, তলোয়ার ছাড়া এ মেয়েরাও যে দাপটের সাথে রাজত্ব করতে পারে তা যেনো আগে কারো মাথায় আসেনি। তাই সাই পল্লবীকেও মেলানো যাবে না আর আট-দশজন অভিনেত্রীদের সাথে।
কারণ পৃথিবীর সব সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির কমবেশি অভিনেত্রী যখন মেকআপ ছাড়া চলতেই পারে না, স্ট্রেট হেয়ার আর প্যানকেক ছাড়া যখন সব শর্ট ওকে হচ্ছেনা; সেই সময় সাই পর্দায় এলেন তার কোঁকড়া চুল এবং ব্রণের দাগ কে সঙ্গে করে। প্রায় মেকআপ ছাড়া শর্ট দিলেন আর পৌঁছে গেলেন দর্শকদের মনের অন্দরমহলে। তাই দর্শকদের সঙ্গে তার সম্পর্কটাও হয়েছে সরাসরি। মাঝে নেই কোন কাচের দেওয়াল বা রোদ চশমা। দর্শকরা তাকে তারকা হিসেবে নয় বরং আপন করে নিয়েছেন তাদের একজন হিসেবে।
সাই বলতেন, আমাদের দেশের নারীরা প্রায় আমার মতোই সাধারণ। মুখে ব্রনের দাগ, উচ্চতার দিক থেকেও খুব একটা লম্বা নয়। আমি তাদের প্রত্যেকের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। আর তার এই স্বপ্ন যেন এখন সত্যি প্রায়। কারণ সাইকে অনুপ্রেরণা ভেবে নিজের আসল চেহারাকে ভালবাসতে শিখেছেন শুরু করেছেন দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েরা। আসতে চাইছেন সিনেমাতেও। অভিনেত্রী হতে হলে গায়ের রং শ্যাম বর্ণ হওয়া চলবে না, নিখুঁত চেহারার হতে হবে। সাইয়ের মতো আরো অনেকেই দর্শক এবং সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির এই ধারণা বদলে দিবে এমনটাই প্রত্যাশা নারীদের।