
শামছুল আলম আখঞ্জী তাহিরপুর প্রতিনিধি– হাওর বাওর ভাটি অঞ্চলের মানুষ এক বোর ফসলের উপর নির্ভর’যা আয় তা দিয়ে চলে জীবন সংসার। পুরোটা ফসলেই নির্ভর করে প্রকৃতির উপর। দুর্যোগ আবহাওয়া সহনীয় হলে’ঘরে উঠে সোনালী ফসল। অন্যথায় হাওর পাড়ের কৃষকের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার’ছেলে মেয়ে পরিবার পরিজনের খাদ্য যোগানে হয়ে পড়ে দিশেহারা অভিবাবক। নিয়তি খেলে, আপন মনে ,কে বুঁজে, তাঁর খেলা। তাঁরই প্রতিফলন ঘটেছে এবার। পরিত্যক্ত বোর ফসলে, এসেছে যৌবনের জোয়ার।অল্প দিনেই পাঁকা ধানের সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে হাওর জোড়ে, এসব দেখে হাওর পাড়ের হতদরিদ্র অসহায় গরিব দুঃখী শ্রমজীবী মানুষের মুখে ফোটে উঠেছে হাসি। হাওরের পাঁকা ধান উম্মুক্ত’কাটতে নেই বাঁধা। হয়েছে বিকল্প কর্মসংস্থান। যত শ্রম তত ধান, শ্রমিকের অন্তরে মনে হয়’এযেন বিজয়ের জয়গান। যদি আর কিছু দিন প্রকৃতি অনুকূলে থাকতো,অসহায় গরিব দুঃখী শ্রমিকের গোলায় উঠত’ শত মন ধান।
হাওরের জনপদে’ বৈশাখ শেষে, এলাকায় থাকে না কোন কর্মসংস্থান, শ্রমিক’ শ্রম বিক্রয়ে পড়ে বাঁধা। দিশেহারা হয়ে ছুটে চলে,ভরে আনে শরীরে অলস্যতা। অর্থ সংকটে দেয় দেখা। পরনিন্দা, অযুক্তি তর্কে যায় বেলা। কিন্তু এবার নিয়তি মুখ তুলে থাকিয়েছে শ্রমজীবীর দিকে। তৈরি হয়েছে বিকল্প কর্মসংস্থান। যাঁর কারণে শ্রমজীবী মানুষ’ শ্রম অন্যের কাছে বিক্রি না করে ও অর্থ নৈতিক সংকট দেখা দেয়নি। যাঁর কারণ উচ্ছিষ্ট ফসল ঘরে তুলতে পেরেছেন বরং অর্থ নৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে শ্রমজীবী মানুষ।
হাওর পাড়ের শ্রমিক জানে আলম বলেন,যদি সরকার বাহাদুর একটু পদক্ষেপ নিতেন। উচ্ছিষ্ট ফসল(টেমি)ধান পাকলে,কাঁটার জন্য কিছু সময় রাখতেন। যাতে হাওরে পানি প্রবেশ, না করতে পারে, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেন । তাহলে আমার মত হাজার হাজার অসহায় গরিব দুঃখী মানুষ (উচ্ছিষ্ট ফসল) টেমি ধান কেটে গোলায় তুলতে পারতাম । এতে আমরা অনেক টা স্বাবলম্বী হতে পারব। বিশেষ করে, যে বছর অতি বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের পানি না আসে। সেই বছর স্লুইস গেইট খুলে না দিলে। শত শত মন উচ্ছিষ্ট ফসলের (টেমি) পাঁকা ধান কেটে গোলায় উঠাতে পারবে, এই আমার বিশ্বাস ।
সরজমিন ঘুড়ে দেখা গেছে, তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওরে শত শত শ্রমজীবী মানুষ উম্মুক্ত ভাবে উচ্ছিষ্ট ফসল (টেমি)র পাঁকা ধান কাঁটার উৎসবে মেতে উঠেছে হাওর পাড়ের শ্রমজীবী মানুষ । যাহা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। পরিত্যক্ত বোর জমিতে এত ফসল। হাওর পাড়ের শ্রমিক শাহিন বলেন । প্রতি কেয়ারে (৩০শতক) জমিতে ৩মন দরে উচ্ছিষ্ট ফসল (টেমি) পাঁকা ধান হচ্ছে । আমরা প্রতি দিন প্রায় ১মন পাঁকা ধান কাটতে পারছি । যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা পাহাড়ি ঢল না আসে।তাহলে ৬মাসের খাদ্য সংগ্রহ করতে পারব।এবার আল্লাহ আমাদের দিকে মুখ তুলে থাকিয়েছেন ।
মাটিয়ান হাওর পাড়ের কৃষক জিয়াউর রহমান আখঞ্জী বলেন, উচ্ছিষ্ট ফসল (টেমি )পাঁকা ধান আমার মত কৃষকের কোন দাবী থাকে না। কারণ আমাদের দেশে প্রচলন আছে, উচ্ছিষ্ট ফসল (টেমি)র পাঁকা ধান অসহায় গরিব দুঃখী মানুষের হক। আমরাও পূর্ব পুরুষের নিয়ম কানুন মেনে থাকি। তাই আমরা এসব ফসলে আধিপত্য বিস্তার করি না। উম্মুক্ত ভাবে সকলেই তা ভোগ করেন।