
গণপরিবহণে ভাড়া নিয়ে চলছে চরম নৈরাজ্য। যাত্রী নেওয়া হচ্ছে দ্বিগুণ, ভাড়াও নিচ্ছে দ্বিগুণ। নগরীর প্রতিটি রুটেই আদায় করা হচ্ছে এমন অতিরিক্ত ভাড়া। এসব গণপরিবহণে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধিও। মাস্ক পরছেন না চালক-হেলপাররা। যাত্রীরাও মাস্ক ছাড়াই নির্বিঘ্নে যাতায়াত করছেন। দুই সিটে একজন করে যাত্রী নেওয়ার কথা থাকলেও প্রতি সিটে বসিয়ে, এমনকি দাঁড়িয়েও যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। শুধু নগরী নয়, উপজেলাগুলোয়ও চলছে এমন নৈরাজ্য। এ অবস্থায় গণপরিবহণে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ও ভাড়া নৈরাজ্য ঠেকাতে আজ বুধবার থেকে মাঠে নামছেন জেলা প্রশাসনের ছয়জন ম্যাজিস্ট্রেট। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। তবে ভাড়া নৈরাজ্য রোধ ও স্বাস্থ্যবিধি কার্যকরে বিআরটিএ, জেলা প্রশাসন ও ট্রাফিক বিভাগের সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান যাত্রীরা
ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে পরিবহণ শ্রমিকদের প্রতিনিয়ত বাগ্বিতণ্ডা হচ্ছে। লকডাউন শিথিলের পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত যাত্রী নিয়ে গণপরিবহণ চলাচলের ঘোষণা দেয় সরকার। এক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারের সেই সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলেছেন পরিবহণ শ্রমিকরা। নগরীর একাধিক ট্রাফিক পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, গণপরিবহণে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষিত। নির্দেশনা অমান্য করে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা এবং ৬০ শতাংশের পরিবর্তে ১০০ শতাংশেরও বেশি ভাড়া হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। নগরীর প্রতিটি সড়কে দেখা গেছে এমন চিত্র। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।
আগ্রাবাদ, বহদ্দারহাট, চকবাজার, নিউমার্কেটসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাস, টেম্পো, হিউম্যান হলার-কোনো পরিবহণেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। আগের নিয়মে শতভাগ পূরণ করেই যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। হিউম্যান হলারে আতুরার ডিপো থেকে কাজীর দেউড়ী পর্যন্ত ভাড়া ৭ টাকা। এখন আদায় করা হচ্ছে ১৫ টাকা বা তারও বেশি। চান্দগাঁও রাস্তার মাথা থেকে বহদ্দারহাট ভাড়া ৭ টাকা। এখন আদায় করা হচ্ছে ১৫ টাকা। বাসে নতুন ব্রিজ থেকে বহদ্দারহাট ভাড়া ছিল জনপ্রতি ৫ টাকা থেকে ৬ টাকা। মাহিন্দ্রায় জনপ্রতি ভাড়া ছিল ৮ টাকা।
কিন্তু এখন জনপ্রতি বাস ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ১২ থেকে ১৪ টাকা। মাহিন্দ্রায় জনপ্রতি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। এছাড়া কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে ২ নম্বর গেটের ভাড়া ছিল ৮ টাকা। ৬০ শতাংশ বাড়তি অজুহাতে এখন ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১৫ টাকা। ক্ষেত্রবিশেষে ২০ টাকাও দাবি করা হচ্ছে। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত বাগ্বিতণ্ডা লেগে রয়েছে। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় দ্বিগুণ ভাড়ার চাপ মেনে নিয়েছেন যাত্রীরা। কিন্তু কম যাত্রীর অজুহাতে পরিবহণ শ্রমিকরা আদায় করছে তিনগুণের কাছাকাছি ভাড়া। এতে নিু ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি এবং চাকরিজীবীদের রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠেছে।
(সংগৃহীত)