
আজ ২ মে চন্দনাইশ শাহ্ছুফী মমতাজিয়া দরবার শরীফ ও সাতকানিয়ার মির্জ্জিরখীল দরবার শরীফের অনুসারীরা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করেছেন। দেশের চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার, নোয়াখালী, কুমিল্লা, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা, ময়মনসিংহ, ঢাকা, গাজীপুর, সিলেট, মৌলভীবাজার, খুলনা, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ফিরোজপুর, ঝালকাটি, ফরিদপুর, মাদারীপুরের অর্ধ সহস্রাধিক গ্রামে আজ সোমবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। চন্দনাইশ শাহ্ছুফী মমতাজিয়া দরবার শরীফ মাঠে সকাল ৯টায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে ইমামতি করেন দরবার শরীফের পীর মাও. হযরত শাহ্সুফি ছৈয়্যদ মোহাম্মদ আলী (মাঃজিঃআঃ)। খুতবা পাঠ করেন শাহাজাদা মতি মিয়া মনছুর।
সৌদি আরবসহ বিশ্বের অন্যান্য স্থানের সাথে সংগতি রেখে মাহে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়াকে কেন্দ্র করে চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চননগর শাহ্ছুফী মমতাজিয়া দরবার শরীফ ও সাতকানিয়া উপজেলার মির্জ্জিরখীল দরবার শরীফের অনুসারীরা আজ ২ মে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করেন। তার অংশ হিসেবে চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চননগর, পশ্চিম এলাহাবাদ, উত্তর কাঞ্চননগর আব্বাস পাড়া, পূর্ব এলাহাবাদ, মাইজপাড়া, ছৈয়দাবাদ, হাশিমপুর খুনিয়া পাড়া, পৌরসভার দক্ষিণ হারলা, সাতবাড়ীয়া, বরমা, বাইনজুরী, কেশুয়া, কানাইমাদারী, দক্ষিণ হাশিমপুর বড়পাড়া, ধোপাছড়ি, পটিয়ার হাইদগাঁও, মংলারপাড়া, বাহুলী, কালারপুল, খরনা, সিয়ানপাড়া, বাথুয়া, রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা, লিচুবাগান, কুলুশিয়া, মদুনাঘাট, সাতকানিয়ার বাজালিয়া, ফকিরপাড়া, কেওচিয়া, মির্জারখীল শাহপুর, ঢেমশা, চরতী, বাঁশখালীর গুনাগুরী, মইশ্যাপাড়া, গুয়াজরপাড়া, কালীপুর, আনোয়ারার তৈলারদ্বীপ, বুরুমছড়া, লোহাগাড়ার বড়হাতিয়া, সীতাকুন্ডুর রহমতপাড়া, বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুন্ডু, সন্দীপ, মিরসরাই, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া, উখিয়া, বান্দরবান, আলী কদমে আজ সোমবার ঈদ উদযাপিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ, কুতুবপুর, ফেনী, ঢাকা জেলার নারায়নগঞ্জে লামাপাড়া ফতুল্লা, বরিশার জেলার সাগরদী, টিয়াখালী, জিয়াসড়ক, বাবুগঞ্জে খানপুরা, মাধবপাশা, কেদারপুর, মাধবপাশা,মেহেন্দীগঞ্জে তালুকদারচর,পতাং, চরকেউটিয়া,সাহেবের হাট, বাকেরগঞ্জের সুন্দরকাঠি দরবার শরীফ, গোমা, পেয়ারপুর হিজলায় শ্রীরামপুর দরবার শরীফ, ঘোশেরচর, মুলাদী, উত্তমনগর, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, পটুয়াখলীর বাউফলে ধাউরাভাঙ্গা, শাবুপুড়া, কয়েনা, শাপলাখলী, রাজনগর, দ্বিপাশা, মদনপুরা, চন্দ্রপাড়া, তাতেরকাঠি, রাঙ্গাবালীর-পশুরীবুনিয়া, চরযমুনা, সেনেরহাওলা, খালগোড়া বাজার, ফুলখালী, কোরালিয়া, বাহেরচর, গলাচিপা, ডাকুয়া, কলাপাড়া সদর,ইটবাড়িয়া, নিশানবাড়িয়া দরবার শরীফ,ধানখালী, পাঁচজুনিয়া, চালিতাবুনিয়া, লালুয়া, তেগাছিয়া, চান্দুখালী দরবার শরীফ এবং বরগুনা, শরিয়তপুর, মাদারিপুর, নরসিংদি,ভোলাসহ বাংলাদেশে প্রায় শতাধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় বলে সংশ্লিটরা জানান।
জানা যায়, প্রায় দুই শতাধিক বছর আগে সাতকানিয়া মির্জাখিল গ্রামে হযরত মাওলানা মোখলেছুর রহমান জাহাঁগিরি (রঃ) হানাফী মাজহাবের ফতোয়া অনুযায়ী পৃথিবীর যে কোন দেশে চাঁদ দেখা গেলে রোযা ও ঈদসহ সকল ধর্মীয় উৎসব পালন করার ফতোয়া দিয়েছেন। তারই উত্তরসুরি হযরত মাওলানা আবদুল হাই জাহাগিরীর অন্যতম খলিফা চন্দনাইশ শাহ্ছুফি দরবারের পীর হযরত মাওলানা শাহ্ছুফি আমজাদ আলী (রঃ) মুরিদ ও অনুসারিরা একই নিয়মে ঈদ উৎসব পালন করে আসছে। দরবার শরীফের পীর মাও. হযরত শাহ্সুফি ছৈয়্যদ মোহাম্মদ আলী (মাঃজিঃআঃ) উক্ত দরবারের ঈদের জামাত পরিচালনা করবেন। তিনি অন্যান্য দরবারের অনুসারীরা যারা কাল ঈদ পালন করছেন তাদেরকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানিয়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে একই দিনে রোজা ও ঈদসহ সকল ধর্মীয় কার্যক্রম পালনের আহবান জানান।
এখানে উল্লেখ্য যে, গত ২ এপ্রিল (শনিবার) সাতকানিয়া মির্জাখীল ও চন্দনাইশ শাহসুফি দরবার শরীফের অনুসারীরা বিশ্বের যুক্তরাষ্ট্রে চাঁদ দেখা যাওয়ার উপর ভিত্তি করে রোজা শুরু করেছিলেন। সে হিসেবে আজ ২ মে মাহে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখাকে কেন্দ্র করে ঈদুল ফিতর পালন করতে যাচ্ছে। একইভাবে মির্জাখীল দরবারের সাজ্জাদানশীন শাহজাদা মাওলানা সাজ্জাদুল আরেফিন সৌদি আরবের সাথে সংগতি রেখে রোজার নিয়মে ঈদ পালন করার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এদিকে চন্দনাইশ শাহছুফি দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন শাহসুফি মাওলানা ছৈয়দ মো. আলী (মঃজিঃআঃ) তাদের পূর্ব পুরুষের নিয়মানুযায়ী বিশ্বের যে কোন স্থানে চাঁদ দেখাকে কেন্দ্র করে রোজা ও ঈদ পালন করে থাকেন। সে হিসেবে বিশ্ব জনগোষ্টির সাথে সংগতি রেখে এবছরও রোজা পালনের পাশাপাশি আজ ২ মে ঈদুল ফিতর পালন করেন।