প্রেমিকের নিক্ষেপ করা দাহ্য পদার্থে ঝলসে যাওয়া ইয়াসমিন (২০) দীর্ঘ ১০ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হাড় মেনে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। নিহত কিশোরী চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ডিঙ্গললোঙ্গো এলাকার আবুল বাশারের মেয়ে।
শনিবার (১৪ মে) বিকেল সাড়ে ৫ টায় ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিউল আলম। এর আগে গত (৪ মে) রাতে মো. আজিম (৩০) নামের একজন ইয়াছমিন আকতারকে দাহ্য পদার্থ ছুড়ে মারে। এতে ঝলসে যায় ইয়াসমিনের ৮০শতাংশ শরীর। অপরদিকে ইয়াছমিন আকতারেকে দাহ্য পদার্থ ছুঁড়ে মারার দায়ে মো. আজিমকে ( ৩০) রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন। রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব মিলকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, এসিড নিক্ষেপকারী মো. আজিম(৩০) এর সাথে ইয়াছমিন আকতারের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একপর্যায়ে ইয়াছমিন জানতে পারে যে, আজিম বিবাহিত এবং তার সন্তান রয়েছে। তারপর থেকে ইয়াসমিন নিজেই তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে। ঘটনার দিন রাতে গত (৪ মে) ইয়াছমিনের বাড়ির জানালা দিয়ে আলাপ করার একপর্যায়ে হঠাৎ তার শরীরে এসিড জাতীয় দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করে আজিম। এ ঘটনায় ইয়াছমিন আকতারের ভাই আবু তাহের বাদী হয়ে থানায় মো. আজিমকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করলে চন্দ্রঘোনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ইয়াছমিন আকতারের ভাই আবু তাহের বলেন, ‘গত (৪ মে) রাত ২ টার দিকে হঠাৎ ইয়াছমিনের চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে দেখি তার শরীরের অর্ধেক ঝলসে গেছে। তার এই অবস্থা কে করেছে জানতে চাইলে ইয়াছমিন জানায়, আজিম জানালা দিয়ে এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে গেছে। তাৎক্ষণিক পুলিশকে খবর দিলে তাদের সহযোগিতায় ইয়াছমিনকে প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য চন্দ্রঘোনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। তার অবস্থা গুরুত্বর দেখে সেখানকার চিকিৎসকরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।’ তিনি জানান, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার অবস্থার অবনতি দেখা দিলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়।’
এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব মিলকী বলেন, ‘ইয়াছমিন আকতারকে জানালায় ডেকে আলাপ করার সময় একপর্যায়ে মো. আজিম(৩০) তাকে এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় রাঙ্গুনিয়া থানায় এসিড নিক্ষেপের একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।’ ইয়াছমিন আকতার মারা যাওয়ায় এখন এ মামলাটি হত্যা মামলায় রুপান্তর হবে বলে জানান তিনি।