
চুরির অপবাদে নারীসহ চারজনকে বেঁধে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার (১০ জুন) উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের খাঁপুর গ্রামে।মঙ্গলবার (১৪ জুন) লোমহর্ষক ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। নির্যাতিত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (১০ জুন) সকালে খাঁপুর গ্রামের মৃত তাজিম উদ্দীনের সরকারের ছেলে ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হান্নান, মৃত শরিফ উদ্দীনের ছেলে আব্দুর রহমান, আব্দুল হান্নানের ভাই রকিবুল ইসলাম, মৃত তমিজ উদ্দীন সরদারের ছেলে আব্দুল জব্বারসহ স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য রেহেনা পারভীন ছাগল চুরির অপবাদে খাঁপুর গ্রামের সিদ্দিকের ছেলে রিপন, ইয়াছিন আলীর ছেলে ইদ্রিস আলী, আব্দুল হামিদের ছেলে হেলালকে ধরে নিয়ে হান্নানের বাড়িতে আটকে রেখে দিনভর মাধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের খবর পেয়ে হেলালের স্ত্রী শামিমা সুলতানা ছুটে এলে তাকেও বিবস্ত্র করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়।
নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা জানান, প্লায়ার্স ও হাতুড়ি দিয়ে রিপন, হেলাল ও ইদ্রিসের পা ও হাতের নখ থেতলে দেওয়া হয়েছে, হাতের আঙুল জোড়া করে বেঁধে রেখে তার ভেতরে ছাগল বাঁধার খুঁটা ঢুকিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়। এ ছাড়া তাদের আঙুলে ছুঁচ ফুটিয়ে নির্যাতন করা হয়। এ সময় হেলালের স্ত্রী শামিমা সুলতানা তার স্বামীকে নির্যাতন না করার অনুরোধ জানালে তাকেও বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়।এ বিষয়ে অভিযুক্ত হান্নান ও আ. রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে বলেন, ছাগল চুরির অপরাধে গ্রামবাসী তাদের গণপিটুনি দিয়ে থানায় সোপর্দ করেছে।
এনায়েতপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মেহেদী হাসান মিঞা বলেন, ঘটনাটি সত্যিই দুঃখজনক। এভাবে তাদের মারপিট করা ঠিক হয়নি। এ ব্যাপারে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গ্রামবাসী ছাগল চুরির অপবাদে রিপন, ইদ্রিস ও হেলালকে থানায় সোপর্দ করলে তাদের ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ওইদিনই আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।